খুঁজুন
শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ২০ বৈশাখ, ১৪৩২
লোড হচ্ছে...
সাম্প্রতিক:
খবর লোড হচ্ছে...

ঝটিকা সফরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি

মোঃ সুমন খান,বান্দরবান প্রতিনিধি :
প্রকাশিত: শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ৮:০২ অপরাহ্ণ
ঝটিকা সফরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি

বান্দরবানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি সার্কিট হাউসে পৌঁছলে গার্ড ও অনার প্রদান করা হয়।

আজ ৩ রা মে শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বান্দরবান পার্বত্য জেলা সফর করেন।

সিনিয়র সচিব মহোদয়ের বান্দরবান সফর উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, বান্দরবান পার্বত‍্য জেলার আয়োজনে “জেলা পর্যায়ের সকল দপ্তর প্রধান ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভূমিকা পালন শীর্ষক আলোচনা সভা” জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন মিজ শামীম আরা রিনি, জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম‍্যাজিস্ট্রেট, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, পৃথিবীতে যত রাষ্ট্র আছে সেখানে পুলিশ আছে। পুলিশ সমাজেরই অংশ। আমাদের দেশে পুলিশের জনপ্রিয়তায় যে ভাটা পড়েছে তা উদারচিত্তে আলোচনা হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, পুলিশের সাথে জনগণের দূরত্বের গোড়ায় যেতে হবে। জনগনের বিপক্ষে পুলিশকে দাঁড় করানো যাবে না।

তিনি আরও বলেন, ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে- অস্ত্র নয়, জনগণের আস্থা অর্জনই পুলিশের প্রকৃত শক্তি। পুলিশ যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের পাশে থাকে, তবে তারা “ভয়ের প্রতীক” নয়, বরং হয়ে ওঠে “ভরসার আশ্রয়”।

নাসিমুল গণি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর সিনিয়র সচিব বান্দরবান জেলায় আগমন উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বান্দরবান পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম (বার)।

মতবিনিময় সভায় জেলা পর্যায়ের সকল দপ্তর প্রধান ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা শিক্ষক, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ,খেলোয়াড়, অর্থনীতিবিদ, শ্রমিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকগণ, উপস্থিত ছিলেন।

বগুড়া শেরপুরে বর্মণ হেলথ কেয়ারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

নাজমুল হাসান নাজির, বগুড়া প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ণ
বগুড়া শেরপুরে বর্মণ হেলথ কেয়ারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

বগুড়ার শেরপুরে ভুল চিকিৎসায় রত্না বেগম (৪১) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকালে পৌরশহরের বর্মণ হেলথ কেয়ারে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া রোগীর স্বজনদের অভিযোগ চিকিৎসার জন্য নেয়ার পর ভূল চিকিৎসায় কারনে তার মৃত্যু হয়। নিহত রত্না বেগম উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের হাপুনিয়া কলোনী গ্রামের শাহাবুল ইসলামের স্ত্রী ও ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, গত বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে পেটে ব্যাথার কারনে রত্না বেগমকে পৌর শহরের বর্মণ হেলথ কেয়ারে আনা হয়। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দিয়ে পরের দিন আসতে বলেন। এরপর গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় আবার চিকিৎসার জন্য একই ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার তন্ময় বর্মণ নামে একজন চিকিৎসক আগের দিনের ওষুধের সাথে আরো কিছু ওষুধ যোগ করেন এবং রোগীর পরিবার কে নিয়ে আসতে বলেন। এ সময় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষাও করা হয়। রোগীর ছেলে বাহির থেকে ওষুধ ও ইনজেকশন নিয়ে আসার পর রোগীকে ইনজেকশন দেয়ার সাথে সাথে মুখ দিয়ে লালা বের হয় ও খিচুনি দিয়ে নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে স্বাভাবিক করার চেষ্টার এক পর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে নিজেরা এম্বুলেন্স ডেকে রোগীকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এ সময় রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
রোগীর স্বামী শাহাবুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রীকে তারা মেরে ফেলেছে। আমি ওদের বিচার চাই। ঘটনার তদন্ত করে এর সুষ্ট বিচারের দাবী জানান।
নিহতের ছেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমারে মাকে বর্মন হেলথ কেয়ারে নিয়ে গেলে সেখানে আমাকে কিছু ইনজেকশন ও ওষুধ আনতে বলেন, পরে তারা ইনজেকশন দেয়ার ১ মিনিটের মধ্যে খিচুনি ও মুখ দিয়ে লালা পরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। তাদের ভূল চিকিৎসার জন্য আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
শেরপুর থানার অভিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বগুড়ায় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ৭:৫৭ অপরাহ্ণ
বগুড়ায় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি

বগুড়ায় সাংবাদিক নজরুল ইসলাম দয়ার ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতনে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের কর্মসূচিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন বক্তারা।
গতকাল শনিবার দুপুরে বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় আয়োজিত মানববন্ধনে সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও ইনকিলাবের বিশেষ প্রতিবেদক মহসিন আলী রাজু বলেন, সাংবাদিক নজরুলের ওপর হামলার তিনদিনেও জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গণমাধ্যম দিবসে একজন প্রতিবাদী সাহসী সাংবাদিক হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। তার পুরো শরীরে আঘাতের ক্ষত।
গত বুধবার রাতে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডের ফিলিং স্টেশন এলাকায় মব সৃষ্টি করে সাংবাদিককে প্রকাশ্যে পিটিয়েছে একদল দূর্বৃত্তরা। বর্তমানে তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। হামলার শিকার নজরুল ইসলাম দয়া দৈনিক ভোরের ডাকে কর্মরত, নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব এবং জেলা অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিক নজরুল সাহসের সঙ্গে সোজাসাপটা সংবাদ প্রকাশ করে। কখনোই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেনি। ইতিপূর্বে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ একাধিক মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছে। একাধিকবার এলাকাছাড়া হয়েছিল এবং থানার মধ্যেও তার ওপর হামলা করেছিল। একযুগ নির্যাতনের শিকার সাংবাদিককের ওপর কেন বর্বরোচিত হামলা। জড়িতদের শনাক্ত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
মানববন্ধনে বগুড়া জেলা অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মাকছুদ আলম হাওলাদারের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক এসএম দৌলত, আব্দুল মতিন, নব কুমার সূর্য্য, এমদাদুল হক, রহিদুর রহমান মিলন, রাসেল মাহমুদ, রবিউল ইসলাম রবি, শিপলু রহমান, তানসেন আলী মন্টু, ববিন রহমান, শাহিন আলম, সাদিকুর রহমান, আরিফ চৌধুরী, মোরশেদুল ইসলাম, শাহজাহান আলী, আনোয়ার হোসেন, সাজু মিয়া, শেখর চন্দ্র টুটুল, মিজানুর রহমান, বাকী বিল্লাহ, উৎপল কুমার মোহন্ত, রুহুল আমিন, সোহাগ আলী, হেদায়েতুল ইসলাম লিটন, আবু হাসান হাবীব, হাফসা পারভিনসহ বগুড়ার কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

দাবি আদায়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও বিভাগীয় সম্মেলনের ঘোষণা হেফাজতের

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশিত: শনিবার, ৩ মে, ২০২৫, ৪:০৬ অপরাহ্ণ
দাবি আদায়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও বিভাগীয় সম্মেলনের ঘোষণা হেফাজতের

সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, “নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন করা হবে। এছাড়া আগামী ২৩ মে বাদ জুমা চার দফা দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।”

শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে এই দুই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমাবেশে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী।

লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে আমরা বিজয়ের স্বাদ লাভ করি এবং হারানো স্বাধীনতা ফিরে পাই। যা অর্জিত হয়েছে সহস্রাধিক প্রাণ ও অকল্পনীয় আত্মত্যাগের বিনিময়ে। স্বাধীনতা আল্লাহর দান- গত ১৫ বছর যা থেকে আমরা বঞ্চিত ছিলাম। তাই মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি।’

আজিজুল হক ইসলামাবাদী আরও যোগ করে বলেন, “আমাদের দেশ এখন বহুমুখী সংকটে রয়েছে। একই সঙ্গে আগ্রাসী ভারতের ষড়যন্ত্রও থেমে নেই। উপরন্তু, মানবিক করিডোরের নামে সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের ভূরাজনৈতিক লড়াইয়ের স্বার্থে আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশকে নতুন যুদ্ধের ক্ষেত্র বানাতে পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের জাতীয় ঐক্য আরও সুদৃঢ় করতে হবে।

বাংলাদেশ নিয়ে আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ষড়যন্ত্র ঠেকাতে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নানান সংকট মোকাবিলায় আমাদেরকে জুলাই-আগস্টের মতো ইস্পাত-কঠিন জাতীয় ঐক্য ও সংহতি আবারও গড়ে তুলতে হবে।

দেশে ইসলামবিরোধী গোষ্ঠী আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন দাখিল করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এনজিওবাদী গোষ্ঠীর প্ররোচনায় এমন কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিবেন না, যা কোরআন-সুন্নাহর বিরুদ্ধে যায়।”

আজিজুল হক বলেন, “আমরা সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি, দেশের যৌতুকপ্রথা বন্ধে কঠোর আইন করুন। শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। এছাড়া, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও সাইবার সিকিউরিটি আইন থেকে ধর্ম অবমাননার শাস্তি সংক্রান্ত ধারাগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে, এটি আরেক গভীর ষড়যন্ত্র। সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু- কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অধিকার অন্য কারেও নেই। তাই ধর্ম অবমাননার শাস্তির আইনি ধারাগুলো বহাল রেখে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের ওই নির্দিষ্ট সুপারিশগুলো বাদ দিতে হবে।

শুধু তা-ই নয়, আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.)-এর নামে কটূক্তি বা বিষোদ্গার বন্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির আইন করতে হবে। ৫ আগস্টের এই বিজয়কে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে হবে। এমন একটি ন্যায়ভিত্তিক সংবিধান ও সরকারব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে করে এই বাংলাদেশের মাটিতে আর কখনো কোনো ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের জন্ম না হয়।”

১২ দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক।

১২ দফা দাবি হলো:

১. নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তাদের কোরআন বিরোধী প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিলপূর্বক আলেম-ওলামাদের পরামর্শক্রমে ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর নারী সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে। নারীর সামাজিক উন্নয়নে পশ্চিমা মূল্যবোধ নয়, বরং আমাদের নিজস্ব সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকেই বাস্তবমুখী সংস্কারের দিকে যেতে হবে।

২. সংবিধানে আল্লাহর ওপরে পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করতে হবে। ধর্মপ্রাণ গণমানুষের ঈমান ও আমল রক্ষার্থে বহুত্ববাদ নামক আত্মঘাতী ধারণা থেকে সরকারকে সরে আসতে হবে। এছাড়া লিঙ্গ পরিচয়, লিঙ্গ বৈচিত্র্য, লিঙ্গ সমতা, তৃতীয় লিঙ্গ বা থার্ড জেন্ডার ইত্যাদি শব্দের মারপ্যাঁচে, কাউকে বাদ দিয়ে নয় এমন ধোঁয়াশাপূর্ণ স্লোগানের অন্তরালে এবং অসাম্প্রদায়িক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শব্দের আড়ালে এলজিবিটি ও ট্রান্সজেন্ডারবাদের স্বীকৃতি ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সমাজবিধ্বংসী ধর্মবিরুদ্ধ সমকামীবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা বন্ধ করতে হবে।

৩. শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচারে গতি আনতে ট্রাইব্যুনালে সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা ও তার চিহ্নিত দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করব বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম ও তৎপরতা নিষিদ্ধ করতে হবে।

৫. আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) এর নামে কটূক্তিকারী ও বিষোদ্গার বন্ধে কঠোর আইন করতে হবে। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ধর্মীয় অবমাননা সংক্রান্ত শাস্তির আইনি ধারাগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ বাতিল করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।

৬. চট্টগ্রামে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হাতে শহীদ সাইফুল ইসলাম হত্যার উসকানিদাতা চিন্ময় দাসের জামিন প্রত্যাহারপূর্বক তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।

৭. ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে সারা দেশে প্রতিবাদী আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও ইসলামমনা তরুণদের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যে ও বানোয়াট সব মামলা অতিসত্বর প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তি করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে। সেই সঙ্গে জঙ্গি নাটক বা জঙ্গি কার্ড খেলে বাংলাদেশকে ইসলামপন্থি ও আলেম-ওলামাদের গত ১৫ বছর যারা নির্যাতন চালিয়েছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৮. গাজার মুসলমানদের ওপর অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা ও ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই সরকারকে কূটনৈতিকভাবে আরও উচ্চকণ্ঠ হতে হবে এবং দেশের সর্বস্তরের জনতাকে ইসরায়েলি ভারতীয় পণ্য বয়কট করতে হবে।

৯. ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ। শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সর্ব পর্যায়ে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

১০. রাখাইনকে মানবিক করিডোর প্রদানে সরকারের সম্মত হওয়া সম্পূর্ণরূপে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। আমাদের ভৌগোলিক নিরাপত্তার স্বার্থে এ অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে অবশ্যই অনতিবিলম্বে ফিরে আসতে হবে।

১১. চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে ভিনদেশি মিশনারি অপতৎপরতা ও দৌরাত্ম্য বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বাংলাদেশে ভৌগোলিক ও খণ্ডতায় ও নিরাপত্তা সংকট কমাতে আলেম সমাজের দাওয়াতি কার্যক্রমকে আরও নিরাপদ ও সুযোগ করে দিতে হবে। সেখানে সামরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বৃদ্ধি করা ছাড়াও পাহাড়ি ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক সমঝোতা ও স্থিতিশীলতা বিনির্মাণে রাষ্ট্রীয় তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে।

১২. কাদিয়ানীদের বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। সাধারণ মুসলমানদের ঈমান আকিদা রক্ষার্থে কাদিয়ানীদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাহমুদুর হাসান কাশেমী, নায়েবে আমির আহমেদ কাশেমী, জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক প্রমুখ।

সমাবেশের সভাপতি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ করেন এই মহাসমাবেশ।