ময়মনসিংহে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবাদান কার্যক্রম আরও জোরদারের লক্ষ্যে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের আয়োজনে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (৩০ আগষ্ট) ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ও জেলা মেজিস্ট্রেট মুফিদুর আলম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহেদী।
উক্ত অনুষ্ঠানে ৬৫ জন কমিউনিটি হেলথ্ কেয়ার প্রভাইডার, উপজেলা প্রশাসন, ও উপজেলা হেলথ সেক্টর, জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ সংবাদিক ও সূধীজন মিলিয়ে প্রায় ১৬০ জন এই সেমিনারে অংশ গ্রহন করেন। প্রানবন্ত এই সেমিনারে কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে আগতরা নানা রকম প্রশ্ন, মন্তব্য, মতামত ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানিয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহেদী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোকে সকল ধরনের সহায়তা দেয়া হবে এবং এই নির্দেশনা সংস্লিষ্ট সকলকে দেন। তিনি বলেন, যেখানে ট্রাস্ট বা সরকার আটকে যাবে সেখানে স্থানীয় সরকার বিভাগ তাদের হাত প্রসারিত করবে। সিসির সেবায় রাস্তা, ফেন্সিং, মেরামত, রং করা, ডায়াবেটিক বা প্রেশার মাপার মেশিন ক্রয় করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো: আক্তারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে স্বাস্থ্য খাতের যুগান্তকারী সংস্কার হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন। ওয়ার্ড লেভেলে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করে প্রান্তিক স্বাস্থ্য সেবায় নিয়ে যাওয়া একটি বড় সংস্কার। আরো একটি বড় সংস্কার হলো অধিদ্প্তরের ন্যায় ট্রাস্ট গঠন। ৭০ টি দেশে এই কমিউনিটি ক্লিনিক সমাদৃত হয়েছে, বান কি মুন এদেশে এসেছিলেন প্রান্তিক এই স্বাস্থ্য কাঠামো দেখতে। তিনি বলেন, এই সরকারের বড় একটি সাফল্য হলো ১৪ হাজার সিএইচসিপির চাকরী সরকারী করা হয়েছে। তাদের বেতন Ibass ++ এ দেয়া হচ্ছে। অন্যান্য ভাতাদি বিকাশের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে।
দেশে বর্তমানে ১৪ হাজার ৪৬৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে, আরোও ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। একটি ক্লিনিকে দৈনিক গড়ে ৩৫ জন মানুষ সেবা নিতে আসে। সেই হিসাবে দৈনিক পাঁচ লাখ মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে এসব ক্লিনিক। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে এখন ২২ ধরনের ওষুধ মানুষকে বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। এ তালিকায় কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নেই।
তিনি আরোও বলেন, ডায়াবেটিক মাপা, প্রেশার মাপা বা জ্বর সর্দি কাশী চুলকানীর মতো রোগের চিকিৎসা, মা ও শিশুর পরিচর্যা, বয়ষ্কদের চিকিৎসা, ২২ ধরনের ফ্রী ঔষধ সরবরাহ এবং উপজেলা হাসপাতালে রেফার করার ক্ষেত্রে ময়মনসিংহের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো ১০০% সচল হবে।
অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার, পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. প্রদীপ কুমার সাহা সহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাগণ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তাগণ, জেলার অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, ময়মনসিংহ জেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ-সহ গণমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম ভরসা। সরকারের এ অনন্য উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রামের মানুষ বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন। তারা সেবার মান উন্নয়ন, পরিকাঠামোগত সহায়তা, জনবল প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেন।