Header Logo
Author বার্তা বিভাগ - সকালের দেশ এডমিন
তারিখ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪০ অপরাহ্ণ

মামলা করে নিরাপত্তাহীন পরিবার ধার দেওয়া টাকা চাওয়ায় নির্যাতন অপহরণের অভিযোগ

News Image

ধার দেওয়া টাকা ফেরৎ চাওয়ায় বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ন্যায় বিচার পেতে আদালত আর থানা পুলিশের ধারে ধারে ধর্ণা দিচ্ছেন সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের শিওরখাল-বড়জমাত গ্রামের আব্দুল হকের স্ত্রী হেপি বেগম। ২৭মে বালাগঞ্জ থানায় হেপির দেওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসআই শাহ্ ফরিদ আহমদ তদন্ত করেন। হেপি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ তদন্ত করলেও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তোফায়েল আহমদ সুহেলের দলীয় প্রভাবে মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। ৩জুন আদালতে দায়ের করা হেপির মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৫মার্চ শিওরখাল-কদমতলা গ্রামের কয়েস আহমদ হেপির কাছ থেকে ৫০হাজার টাকা ধার নেন। টাকা ফেরৎ চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে হেপির পারিবারকে ঘায়েল করার ষড়যন্ত্র করেন কয়েস। ২৮এপ্রিল কলেজে যাওয়ার পথে হেপির মেয়ে হাবিবাকে (২১) স্থানীয় মোরার বাজার থেকে কয়েসসহ তার সহযোগিরা অপহরণ করেন। এই মামলায় কয়েসকে প্রধান অভিযুক্ত করাসহ আরও ৭জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছে। কিন্তু দীর্ঘ বিলম্বে তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়ায় হতাশ হেপির পরিবার। ২৮জুলাই সন্ধ্যায় বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিগত ৫মাসে তার পরিবারের উপর হয়ে যাওয়া নির্যাতনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরে হেপি বলেন, তার মেয়েকে অপহরণ করে উপজেলার নলজুড় গ্রামে কয়েসের মামার বাড়িতে আটকে রাখার খবর পান তিনি। মেয়েকে উদ্ধার করতে আবারও থানা পুলিশের দ্বারস্থ হলে পুলিশ কোনো সহযোগিতা করেনি। মেয়েকে উদ্ধারের আর্জি জানিয়ে ৮জুলাই আদালতে মামলা করেন তিনি। ১০জুলাইয়ের মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে বালাগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আদালত। হেপির অভিযোগ, মেয়েকে উদ্ধারের কথা বলে এসআই সৌরভ সাহা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। আবার বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের সাথে আতাত করে ভিকটিমকে যথাস্থানে পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে অভিযুক্তদের মনোনিত লোকজনের স্বাক্ষর নিয়ে তড়িঘড়ি করে ৯জুলাই ‘শূন্য তল্লাশী’ নামে আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ করায় বিষ্মিত হন হেপির পরিবার। এর আগে ৪জুন আদালতে হেপির দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৭মে হেপির বসতঘর ভাঙচুর, টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুট ও বসতঘরে অগ্নি সংযোগ করা হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে আদালতে এই মামলাটি দায়ের করায় আবারও শুরু হয় নির্যাতন। সংবাদ সম্মেলনে হেপি বলেন, ১৯ জুন তার বাড়িতে আরেক দফা ভাঙচুর, লুটপাট, গোয়ালঘর, খড়ের ঘরসহ বসতঘরে পেট্রোল ছিটিয়ে অগ্নি সংযোগ করা হলে ৩টি ষাঁড় পুড়ে মারা যায়। এসব ঘটনায় তার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি এখন নিঃস্ব। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নিরাপত্তা চেয়ে ফের থানায় মামলা করতে চাইলে প্রভাবশালী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতার সুহেলের আশ্রয়-পশ্রয়ে থাকায় থানা পুলিশ মামলা নিতে অনীহা দেখায়। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও প্রাণনাশের হুমকিতে ভীত-স্বন্ত্রস্থ হয়ে তার পরিবার অনেকটা গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ভয়ে তাড়া করায় তাদের সন্তানরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। নিরুপায় হয়ে বারবার মামলা করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ১৯জুনের ঘটনা উল্লেখ করে ২৯জুন আদালতে হেপির স্বামী আব্দুল হকের দায়ের করা মামলাটি থানায় রুজু করে ৩০জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বালাগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আদালত। এই মামলায় সুহেল, কয়েসসহ ৮জনকে অভিযুক্ত করা হয়। হেপির স্বামী আব্দুল হক অভিযোগ করে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফরিদ আর্থিক সুবিধা নিয়ে কালক্ষেপণ করে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ না করায় আমরা ন্যায় বিচার পওয়া নিয়ে শঙ্কিত। সাজানো মামলায় জড়িয়ে আমাদেরকে হয়রানির ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মামলাগুলোর তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া অসৎ পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের বিরোদ্ধে আইন শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি। এবিষয়ে উপজেলা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক তোফায়েল আহমদ সুহেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কয়েস আহমদ বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বালাগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন আহমদ ভুঁইয়া বলেন, তাদের মেয়ে নিখোঁজের সময় আমি ছুটিতে ছিলাম, তারা কার কাছে এসেছিল তা আমার জানা নেই। আদালতের নির্দেশে মেয়েকে উদ্ধারে চেষ্টা করা হয়েছে। যেহেতু আদালতে মামলা চলমান রয়েছে তাই অপহরণ নাকি অন্য কিছু তা আদালত দেখবেন। অন্য কোনো ঘটনায় তাদের দেওয়া লিখিত কোনো অভিযোগ আমি পাইনি।

Watermark