Header Logo
Author বার্তা বিভাগ - সকালের দেশ এডমিন
তারিখ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ০২:১০ অপরাহ্ণ

কারফিউর মধ্যেও গোপালগঞ্জে স্বাভাবিক যান চলাচল

News Image

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘোষিত কর্মসূচিকে ঘিরে গত বুধবার (১৬ জুলাই) সংঘটিত সহিংসতার পর জারি করা কারফিউ এখনো অব্যাহত রয়েছে। দফায় দফায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর বুধবার রাতেই এই কারফিউ কার্যকর হয়। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) কারফিউর সময়সীমা বাড়িয়ে শুক্রবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১টা পর্যন্ত করা হয় এবং দুপুর ২টা থেকে শিথিল রেখে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়ানো হয়।

তবে শুক্রবার সকাল থেকেই গোপালগঞ্জ শহর ও আশপাশের এলাকায় যানবাহন ও জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল চোখে পড়ে। আন্তজেলা বাস চলাচল শুরু হয়েছে সকাল থেকেই। সড়কে মানুষের উপস্থিতিও বৃহস্পতিবারের তুলনায় ছিল অনেক বেশি।

শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো যেমন পুলিশ লাইনস, চুয়াডাঙ্গা মোড়, কাঁচাবাজার, লঞ্চঘাট ও বিসিক এলাকায় জনসাধারণের ভিড় ও স্বাভাবিক ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট ও গোপালগঞ্জ-ব্যাসপুর রুটে বাস চলাচল ছিল সচল। দূরপাল্লার বাসগুলোও আগের দিনের তুলনায় বেশি চলাচল করেছে।

বাজার করতে আসা স্থানীয় এক নারী, সাবিনা বেগম, জানান, ‘গত দুই দিন বাসা থেকে বের হতে পারিনি। তাই আজ সকালে বাজারের উদ্দেশে বের হয়েছি।’ বিসিক এলাকায় বাজার করতে আসা আরও অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকার পর প্রয়োজনের তাগিদেই বের হয়েছেন।

লঞ্চঘাট এলাকার চিত্রও একই রকম। সেখানে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, রিকশা—সব ধরনের যানবাহন চলতে দেখা গেছে। চালকেরা যথারীতি নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

রিকশাচালক উজ্জ্বল হাওলাদার বলেন, ‘পেটের দায়ে রিকশা চালাই। দুই দিন রিকশা চালাতে পারিনি, কোনো যাত্রী ছিল না। ঘরে চাল নেই, পেটের দায়ে বের হয়েছি। ঘরে বসে থাকলে পেটে ভাত যাবে না। আমি জানি কারফিউ চলছে, কিন্তু কী করব? জীবনের তাগিদে বের হয়েছি।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম নিয়ে আসা মামুন ব্যাপারী জানান, ‘দুই দিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গোপালগঞ্জে আম এনেছিলাম। গ্যাঞ্জামের কারণে গত দুই দিন কিছুই বিক্রি করতে পারিনি। এত টাকার আম সব পচে গেল। আজ কিছু আম নিয়ে বসেছি বিক্রির জন্য।’

উল্লেখ্য, বুধবার এনসিপির ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’কে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এনসিপির মিছিলে হামলা চালায়। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি। এতে চারজন নিহত হন, অন্তত নয়জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। এসব ঘটনার পরই জেলা প্রশাসন কারফিউ জারি করে।

কারফিউ জারি থাকলেও গোপালগঞ্জে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় তার খুব বেশি প্রভাব থাকছে না বলেই দেখা যাচ্ছে। মানুষ জীবিকার তাগিদে রাস্তায় নেমেছেন, চালু হয়েছে যানবাহন, চালু হয়েছে বাজার। তবে পরিস্থিতি যে এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

Watermark