লক্ষ্মীপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরামত করার কিছুদিনের মধ্যে ধ্বসে পড়ে পিলারসহ চালের টিনসেটের পুরো গ্রিল। জানাযায় অধিক লাভের আশায় ঠিকাদার নিন্ম মানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। ঘটনাটি ঘটে জেলার রামগতি উপজেলার ৮ নং বড়খেরী ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এই বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯১৮ সালে । বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর ২০২২ সালে ১টি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। এর আগে টিনসেট ভবনে পড়ানো হোতো শিক্ষার্থীদের। কিন্তু শিক্ষার্থী বাড়ায় শ্রেণীকক্ষ সংকটে উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডির যৌথ উদ্যোগে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি আধা পাকা ভবন নির্মাণের জন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়। কিন্তু কাজ চলমান অবস্থায় ভবনটি নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সাম্প্রতি নির্মাণ শ্রমিকরা ভবনের কাজ করতে গিয়ে মই দিয়ে ভবনের উপর কাজ করার জন্য উঠতে গিয়ে টিনসেটের গ্রিল সহকারে পিলার ভেঙ্গে নিচে পড়ে যায়। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। বিক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এমন পরিস্থিতিতে ভবনটি নির্মাণে অনিয়ম দুর্নীতির মধ্য দিয়ে, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ভবনটিতে কাঠ মিস্ত্রি কাজ করতে মই দিয়ে পিলারের উপর উঠতে গেলে পিলারটি ভেঙ্গে মিস্ত্রি সহ মাটিতে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তখন এলাকাবাসী এসে বাকি পিলার নেড়ে দেখে সেই ১০টি পিলারে কোন রড ব্যবহার করেনি সব কয়টি দোলনার মত দুলছে। তখনি স্কুল কর্তৃপক্ষ কাজের অনিয়ম দেখে কাজ বন্ধ করে দেয় । ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় এমনভাবে ধসে পড়লে অনেক শিক্ষার্থীর প্রাণহানির মত ঘটনাওনঘটতে পারতো বলে মনে করেন এলাকাবাসী । জানা যায়, বেশি লাভের আশায় ইস্টিমেট অনুযায়ী কাজ করেননি ঠিকাদার। এমনকি কাজের সাথে ওয়ার্ক অর্ডারেরও কোন মিল নেই ঢালাইয়ের কাজে পরিমাণে কম সিমেন্ট ব্যবহার, নিম্নমানের সিমেন্ট ব্যবহার , পিলারে কোন রড ব্যবহার না করে কাজ করা হয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা। খবর নিয়ে জানা যায় ভবনটি যেই ঠিকাদারকে দেয়া হয়েছে ঠিকাদার লিটন নামের আরেকজন সাব কন্ট্রাক্টর এর কাছে কাজটি বিক্রি করে দিয়েছে। তবে ভবনটি ধ্বসে পড়ার পরে সাব কন্ট্রাক্টর লিটনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জানতে সাব কন্ট্রাকটর লিটনের ফোনে একাধিকবার ফোন দিল তাকে পাওয়া যায়নি । এলজিইডির উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী স্নেহাল দাশের কাছে গেলে উনি ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন কোয়ালিটি খারাপ হওয়ায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে ভবনটি কলাম ধ্বসে পড়েছে। ঠিকাদারের সাস্তির জন্য সদর দপ্তরে প্রেরণ করেছি। তিনি আরো বলেন, ক্লাসরুম চলা কালীন অবস্থায় এমন ঘটনা যদি ঘটতো তাহলে শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হতো। ঠিকাদারের লাইসেন্সকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রয়াস ব্যক্ত করেছেন তিনি। রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়, আমি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সহকারে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করেছি। এবং ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি। অনিয়মের মধ্যে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন অনিয়ম আছে বিধায় ভবনটির কলাম ধ্বসে পড়েছে এবং উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের যদি কোন গাফিলতি থাকে,তিনি বলেন
গাফিলতি অবশ্যই আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে পাশাপাশি ঠিকাদারের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবং অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ব্লকলিস্ট করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।